আজ পঁচিশ মার্চ। ১৯৯৮ সালের এই দিনে বায়তুশ শরফের আধ্যাত্মিক সাধক, আমার একান্ত শ্রদ্ধাভাজন মুরুব্বী, আল্লামা শায়খ আবদুল জব্বার (র.) মহান রাব্বুল আলামীনের ডাকে সাড়া দিয়ে দুনিয়ার সফর সম্পন্ন করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মরহুম পীর সাহেবের সাথে আমার আত্মিক সম্পর্ক ছিল অবিচ্ছেদ্য। আমি চুনতী হাকীমিয়া কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল থাকাকালীন তিনি ছিলেন উক্ত মাদ্রাসার গভর্ণিং বডির ভাইস- প্রেসিডেন্ট। তাঁর নির্দেশে আমি দীর্ঘদিন মাসিক দ্বীন- দুনিয়া পত্রিকায় ধারাবাহিক প্রবন্ধ প্রকাশ করি। তিনি আমাকে লেখক হিসেবে নিজ হাতে পুরস্কৃত করেছেন। তাঁর জীবদ্দশায় তিনি আমাকে অনেক প্রোগ্রামে নিয়ে গিয়েছেন। তাঁর ওফাতের পরেও ইছালে সাওয়াব মাহফিলে আমি অনেকবার অংশগ্রহণ করেছি। এর ধারাবাহিকতায় এই দরবারের সাথে আমার আধ্যাত্মিক ও আত্মিক সম্পর্ক অদ্যাবধি অক্ষুন্ন আছে এবং উত্তরোত্তর তা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি নিজেকে বায়তুশ শরফের একজন নগন্য খাদেম হিসাবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। তিনি ছিলেন একজন প্রথিতযশা আলিম, একজন বিদগ্ধ স্কলার, একজন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক। তিনি পাঁচলাইশ ওয়াজেদিয়া আলীয়া মাদ্রাসার মুহাদ্দিস ছিলেন, ছিলেন বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসার সুযোগ্য প্রিন্সিপাল। অনেকগুলো মূল্যবান গ্রন্থের লেখক ও অনুবাদক হিসাবেও তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেছেন। আমি বিশ্বের অনেক দেশে গিয়েছি, অনেক শ্রেণী ও পেশার মানুষের সাথে মিশেছি। কিন্তু বায়তুশ শরফের মরহুম পীর আল্লামা শায়খ আবদুল জব্বার (র.)- এর মত এমন নির্লোভ- নির্মোহ, সাদাসিধে জীবন যাপনে অভ্যস্ত, উম্মাহ দরদী, আলিম সমাজের ঐক্যের কাণ্ডারী, মানবিক গুণের অধিকারী আধ্যাত্মিক সাধক দ্বিতীয়জন আমার চোখে পড়েনি। তিনি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ও আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোক্তা, অসংখ্য মসজিদ- মাদ্রাসা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং দ্বীনি ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর প্রতিষ্ঠিত প্রতিটি প্রতিষ্ঠান সমহিমায় তাঁর অমর কীর্তির সাক্ষ্য বহন করছে। আজকের এই দিনে আমি মরহুম পীর সাহেবকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি, জান্নাতুল ফিরদাউসের সর্বোচ্চ আসনে সমাসীন করার জন্য মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে মিনতি জানাচ্ছি এবং তাঁর প্রদর্শিত পথে চলে যেন মানবতার মুক্তি ও মানবকল্যাণে নিজেকে নিজেকে আজীবন নিয়োজিত রাখতে পারি মহান আল্লাহর দরবারে এই দোয়া করছি।