প্রফেসর ড. আ ক ম আব্দুল কাদের
আমার একজন একান্ত কাছের বন্ধু ছিলেন। কয়েকবছর আগে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে যোগদানের আগে তিনি সিলেট ক্যাডেট কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আমরা একান্তে আড্ডায় বসলে তাঁকে সিলেট ক্যাডেট কলেজের কিছু অভিজ্ঞতা জানতে চাইতাম। একদা তিনি সিলেট ক্যাডেট কলেজের তাঁর জনৈক সিলেটি সহকর্মীর কাছ থেকে শোনা একটি গল্প বলে আমাদেরকে আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করেন। গল্পটা ছিল এইরকম:
সিলেটে এক পরিবারে দুইজন জমজ ভাই ছিল। শারীরিক গঠন আর কথোপকথনের দিক দিয়ে তাদের মধ্যে তফাৎ করা ছিল মুস্কিল। একবার সাপের দংশনে দুই ভাইয়ের একজন মারা যায়। ফলে অন্য ভাই শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়ে। ভাতৃ বিয়োগের শোক কাটিয়ে উঠার পর একদিন জীবিত ভাইটি কিছু কেনাকাটার জন্য বাজারে যান। একপর্যায়ে জনৈক পরিচিত ব্যক্তির সাথে তাঁর দেখা। পরিচিত লোকটি জিজ্ঞেস করলো: আচ্ছা বলুন তো, কিছুদিন আগে আপনাদের বাড়িতে যেই লোকটি মারা গেল তিনি কি আপনি ছিলেন নাকি আপনার ভাই ছিল? সে বললো, আমার ভাই ছিল। লোকটি আবার জিজ্ঞেস করলো, উনার কি হয়েছিল? বললো, তাকে সাপে দংশন করেছে? লোকটি পুনরায় জিজ্ঞেস করলো, খুবই দুঃখজনক ঘটনা। কিন্তু কোন জায়গায় দংশন করলো? সে জবাব দিল, বাম চোখের একটু নীচে। তখন লোকটি বললো, মহান আল্লাহর কোটি কোটি শোকর যে তিনি অন্তত চোখটি রক্ষা করেছেন।
গতকাল একজন সুহৃদ খুব আক্ষেপ করে বলেছেন, একুশ বছরের একটি মেয়ে গুলশানে একটি ফ্ল্যাটে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়ে অন্তত অনন্তকালের জন্য নিজের সতীত্বটা রক্ষা করতে পেরেছে। এই মন্তব্য শুনে আমার মরহুম বন্ধুর কাছ থেকে শোনা গল্পটা মনে পড়ে গেল।